“৯ বছর আগে সৌদিপ্রবাসী যুবক মো. রায়হান আলী বগুড়ার সদর উপজেলার বানদীঘি হাপুনিয়াপাড়ায় নিজ বাড়িতে কয়েকজন কারিগর নিয়ে পোশাক কারখানা শুরু করেন। তবে সেখানে সাধারণ শার্ট, প্যান্ট বা গেঞ্জি তৈরি হয় না, হয় মধ্যপ্রাচ্যের অভিজাত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক, যার নাম বিস্ত ও আভায়া।
মাত্র ১৮ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন
রায়হান আলী। বাড়ির পাশে কবুরহাট বাজারে কারখানার জন্য ছয় হাজার টাকায় একটি রুম ভাড়া
নেন। বিভিন্ন পেশার চারজন মানুষকে মাসখানেক প্রশিক্ষণ দিলেন। ভালো মজুরির কথা শুনে
আরও ৭০ জন তরুণ-তরুণী কাজ শিখতে এলেন কারখানায়। এভাবেই যাত্রা শুরু করল রায়হানের মমতাজ
বিস্ত মহল।
রায়হান আলীর কারখানায় চার ধরনের পোশাক তৈরি হয়।
এগুলো হলো আরব দুনিয়ার বাদশাহ ও আমির-ওমরাহদের জন্য স্বর্ণখচিত জরির বিস্ত, অভিজাত
ও মধ্যবিত্তের জন্য বিস্ত এবং বোরকার আদলে নারীদের জন্য আভায়া। এসব পোশাক তৈরিতে আরব
দেশের আবহাওয়ার উপযোগী যে বিশেষ ধরনের কাপড় ব্যবহৃত হয়, তা উৎপাদিত হয় জাপানে। প্রয়োজন
হয় স্বর্ণখচিত জরি। তা উৎপাদন করে সৌদি আরব। ভারতীয় জরিও ব্যবহৃত হয় তুলনামূলক কম দামের
পোশাকে।
মমতাজ বিস্ত মহল কারখানায় বর্তমানে ৩৫ জন কর্মী
কাজ করেন। তাঁরা সাত দিনে গড়ে একটি করে পোশাক তৈরি করতে পারেন। রায়হান আলীর হাতে গড়া
এই কারখানা বর্তমানে মাসে ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের বিস্ত ও আভায়া উড়োজাহাজে করে সৌদি
আরব, কাতার, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৪৭
লাখ ৩৫ হাজার টাকার সমান।
বগুড়ার সদর উপজেলার বানদীঘি হাপুনিয়াপাড়ার পাশের
কবুরহাটে গত বৃহস্পতিবার রায়হান আলীর কারখানায় গিয়ে তাঁর কাছে ভিন্নধর্মী পোশাক উৎপাদন
ও রপ্তানির আদ্যপ্রান্ত শুনলাম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশিদের হাতে তৈরি নান্দনিক এই পোশাক
রপ্তানির মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’”
সূএঃ প্রথম-আলো
©Textile Worldwide24
No comments:
Post a Comment